ব্রিটিশ মন্ত্রীদের দায়িত্বশীলতা কার্যকর করার উপায়সমূহ

ব্রিটিশ মন্ত্রীদের দায়িত্বশীলতা কার্যকর করার উপায়সমূহ

ব্রিটিশ মন্ত্রীদের দায়িত্বশীলতা কার্যকর করার উপায়সমূহ

 মন্ত্রীদের দায়িত্বশীলতা Ministerial Responsibility

ব্রিটেনের সাংবিধানিক ক্রমবিকাশের ইতিহাসে দায়িত্বশীল শাসনব্যবস্থার প্রবর্তন সর্বাপেক্ষা উল্লেখযোগ্য ঘটনা। দায়িত্বশীল শাসনব্যবস্থার অর্থ হলো শাসনকার্য পরিচালনার ভারপ্রাপ্ত মন্ত্রীগণ জনপ্রতিনিধিমূলক কমপসভার কাছে রাজনৈতিকভাবে দায়িত্বশীল ।

হার্মান ফাইনার (Herman Finer)-এর মতে, দায়িত্বশীলতা বলতে এমন একটি আস্থার অবস্থাকে বোঝায় যে, সরকারি -ক্ষমতা কেবল নির্দিষ্ট সীমাবদ্ধতার মধ্যে প্রয়োগ করা যাবে। (Responsibility means that a position of trust is held that is that power can be used only within certain defined limits.)

এ. এইচ. বার্চ (A. H. Birch)-এর মতে, ব্রিটেনে দায়িত্বশীল শাসনব্যবস্থা বলতে মূলত তিনটি জিনিস বোঝায়।

প্রথমত : দায়িত্বশীল শাসনব্যবস্থা হলো এমন একটি শাসনব্যবস্থা, যেখানে সরকার দায়িত্বজ্ঞানহীনভাবে কোনো কাজ করতে পারে না ।

দ্বিতীয়ত : দায়িত্বশীল শাসনব্যবস্থা বলতে সেই শাসনব্যবস্থাকে বোঝায়, যা সংখ্যাগরিষ্ঠ জনগণের মতামতের উপর প্রতিষ্ঠিত।

তৃতীয়ত : দায়িত্বশীল শাসনব্যবস্থায় সরকার সম্পাদিত কার্যাবলির জন্য পার্লামেন্টের কাছে কৈফিয়ত দিতে বাধ্য থাকে। প্রিভি কাউন্সিল, মন্ত্রিসভা এবং কো-কা পালন করেন, তেমনি মন্ত্রিসভা ভেঙে দিতে

লর্ড সলসবেরি (Lord Salisbury) কেবিনেটের দায়িত্বশীলতার সংজ্ঞায় বলেন ধীর দপ্তর পরিবর্তন করতে পারেন। মন্ত্রীগণ পদত্যাগ না করেন তাহলে কেবিনেটের যাবতীয় সিদ্ধান্তের প্রতি তাঁর পূর্ণ সমর্থন আছে বলে দিলে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রী পদত্যাগ করেন। গ্রহণের পর কোনো সদস্য বলতে পারবেন না যে সিদ্ধান্তের একটি অংশের পেছনে তার স্বতঃধানমন্ত্রী নিজে মন্ত্রিসভা ভেঙে অন্যটার ব্যাপারে তিনি সহকর্মীদের দ্বারা প্রভাবিত হয়েছিলেন। (For all that passes in cabinet each জন্ম ও মৃত্যু সবকিছুই resign is absolutely and irretrievably responsible, and he has no right afterwards to say thad central to its does not in one case to a compromise, while in another he was persuaded by his colleagues.)

গ্লাডস্টোন (Gladstone) সলসবেরি প্রদত্ত সংজ্ঞার প্রতি সমর্থন জানিয়ে বলেছেন যে, কেবিনেটের বৈঠকে খোলাখুলিভােেরন। সব বিষয় নিয়ে আলোচনার পর সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়, সুতরাং এই সিদ্ধান্তকে সরকারের সিদ্ধান্ত বলে মনে করতে হবে এবং কেবিনেটের সকল সদস্যের কাছ থেকে এর বিরোধিতা কখনো কাম্য নয়।

উদাহরণস্বরূপ : ১৯৩৮ সালে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইডেনের পদত্যাগের কথা বলা যায়। তিনি প্রধানমন্ত্রী চেম্বারলেনের পররাষ্ট্রনীতির সাথে একমত হতে পারেন নি বিধায় পদত্যাগ করেন ।

দায়িত্বশীলতার শ্রেণিবিভাগ : দায়িত্বশীলতাকে প্রধানত দু’ভাগে বিভক্ত করা যায়। যথা- (ক) আইনগত দায়িত্বশীলতা (Legal responsibility) এবং (খ) রাজনৈতিক দায়িত্বশীলতা (Political responsibility)। আইনগত দায়িত্বশীলতা বলতে বোঝায় প্রত্যেক মন্ত্রী আইনের নিকট দায়িত্বশীল এবং আইন লঙ্ঘন করলে আদালত কর্তৃক দোষী সাব্যস্ত হবেন। অপরদিকে ব্রিটেনে সরকারের প্রতিটি কাজের জন্য মন্ত্রিগণ যখন জনপ্রতিনিধিমূলক কমন্সসভা বা পার্লামেন্টের নিকট দায়ী থাকেন, তখন তাকে রাজনৈতিক দায়িত্বশীলতা বলে। রাজনৈতিক দায়িত্বশীলতাকে দু’ভাগে ভাগ করা যায়। যথা— (১) ব্যক্তিগত দায়িত্বশীলতা (Individual responsibility) এবং (২) যৌথ দায়িত্বশীলতা (Collective responsibility)।

ক. ব্যক্তিগত দায়িত্বশীলতা (Individual responsibility) : সাধারণত প্রত্যেক মন্ত্রী কোনো না কোনো বিভাগের দায়িত্বে থাকেন। প্রত্যেক মন্ত্রীকেই ব্যক্তিগতভাবে তাঁর বিভাগীয় কাজ-কর্মের জন্য দায়ী থাকতে হয়। কর্মকর্তা হিসেবে প্রত্যেক মন্ত্রী নিজ দপ্তরের কাজের ত্রুটি-বিচ্যুতির জন্য পার্লামেন্টের কাছে জবাবদিহি করতে বাধ্য থাকেন। Britain 1981 – An Official Hand book-এ বলা হয়েছে যে, The individual responsibility of a minister for the work of his or her department means that as political head of that department, he or she is answerable for all its acts and omissions and must bear the consequences of any defect of administration, any injustice to an individual or any aspect of policy which may be criticised in parliament, whether personally responsible or not.

একজন মন্ত্রী একটা গোটা দপ্তর পরিচালনা করেন না বা সব কাজ তিনি নিজে করেন না। সব কাজ তাঁর একার পক্ষে করা সম্ভবও নয়। কিন্তু যারাই করুন না কেন সম্পূর্ণ দায়িত্ব মন্ত্রীর। Individual responsibility, in its political meaning ensures that for every actor neglect of his department a minister must answer. এটাই ব্যক্তিগত দায়িত্বশীলতার মূল কথা। উদাহরণস্বরূপ ১৯৩৬ সালে জে.এইচ. টমাস (J. H. Thomas) বাজেট সংক্রান্ত খবর পাচার হয়ে যাবার ফলে পদত্যাগ করেন। ১৯৬৩ সালে যুদ্ধমন্ত্রী প্রফুমো (Profumo) পদত্যাগ করেন ।

খ. যৌথ দায়িত্বশীলতা : যৌথ দায়িত্ব বলতে পার্লামেন্টের কাছে সামগ্রিকভাবে কেবিনেটের দায়িত্বকে বোঝায়। সরকারি নীতি, সিদ্ধান্ত ও সম্পাদিত কার্যাবলির জন্য কমন্সসভার কাছে সমষ্টিগতভাবে মন্ত্রীদের দায়িত্বশীলতাকে যৌথ দায়িত্ব বলে। Britain 1984. An official Hand book-এ বলা হয়েছে, “In principle, once the Government’s policy on a particular matter has been decided, each minister is expected to support it, uniess he chooses to resign, as he is free to do he cannot agree with his colleagues on a matter of general policy or on a single major issue.”

স্যার আইভর জেনিংস (Sir Ivor Jennings)-এর মতে, “যৌথ দায়িত্বশীলতা বলতে বোঝায় কোনো একজন মন্ত্রীর বিরুদ্ধে সমালোচনা হলে সমগ্র মন্ত্রিসভার বিরুদ্ধে সমালোচনা হিসেবে গণ্য হবে এবং কোনো একজন মন্ত্রীর বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব গৃহীত হলে সমগ্র মন্ত্রিসভার বিরুদ্ধে অনাস্থা হিসেবে গণ্য হবে। একজন মন্ত্রীর পরাজয় ঘটলে সমগ্র মন্ত্রিসভার পতন ঘটে।” (Collective responsibility means that an attack on a minister is an attack on the Goverment, the defeat of a minister is the defeat to a Government. It also means that the members of the cabinet express a common opinion.)

হারতে ও ব্যাথার (Harvey and Bather) বলেছেন, কেবিনেটের উত্থান-পতন যুগপৎভাবে ঘটে। যখন কোনো একজন মন্ত্রীর নীতির বিরুদ্ধে সমালোচনা হয় তখন সমগ্র মন্ত্রিসভার বিরুদ্ধে সমালোচনা হয়েছে বলে ধরে নেয়া হয়। এভাবে কোনো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে কোনো একজন মন্ত্রীর বিরুদ্ধে অনাস্থা সমগ্র মন্ত্রিসভার বিরুদ্ধে অনাস্থা হিসেবে গণ্য হবে (The cabinet stands or falls together. Where the policy of a particular minister is under attack, it is the government as a whole which is being attacked. Thus the defeat of a minister on any major issue represents a defeat of the government).

ব্রিটিশ শাসনব্যবস্থায় মন্ত্রীদের দায়িত্বশীলতার নীতি রাজনৈতিক চিন্তার জগতে একটি উল্লেখযোগ্য অবদান। যৌথ দায়িত্বশীলতা বিভাগীয় বিচ্ছিন্নতার নীতির বিরোধিতা করে। প্রত্যেক মন্ত্রীকে অন্যান্য বিভাগের সাথে যুক্ত করার একটি পদ্ধতি হলো দায়িত্বশীলতা। ড: জোহারি (Dr Johari) বলেছেন, “The principle of joint responsibility not only strengthens the position of the cabinet vis-a-vis the Prime Minister, it also enables the ruling party to face opposition in a vigorious manner

মন্ত্রীদের দায়িত্বশীলতা কার্যকর করার উপায়সমূহ

Methods of Implementing Ministerial Responsibility

ব্রিটেনে মন্ত্রীদের দায়িত্বশীলতা কার্যকর করার কয়েকটি পদ্ধতি রয়েছে। নিয়ে মন্ত্রীদের দায়িত্বশীলতা কার্যকর করার পদ্ধতিসমূহ আলোচনা করা হলো :

১. পার্লামেন্ট কর্তৃক মন্ত্রিসভার নিয়ন্ত্রণ : পার্লামেন্টের কাছে মন্ত্রীদের দায়িত্বশীলতা বলতে কার্যক্ষেত্রে কমন্সসভার কাছে দায়িত্বশীলতাকে বোঝায়। কমন্সসভার আস্থা হারালে মন্ত্রিসভার পতন ঘটে। কমন্সসভা মন্ত্রিসভাকে নিয়ন্ত্রণ করার জন্য যেসব পদ্ধতি অবলম্বন করে থাকে এগুলো নিম্নরূপ :

ক. প্রশ্ন জিজ্ঞাসা (Interpellations) : কমন্সসভার সদস্যদের শাসন সংক্রান্ত বিষয়ে মন্ত্রীদের প্রশ্ন জিজ্ঞেস করার অধিকার রয়েছে। সাধারণত, বিরোধী দলের সদস্যগণ সরকারি দলকে অসুবিধায় ফেলার জন্য এ ধরনের প্রশ্ন জিজ্ঞেস করে থাকেন। মন্ত্রীগণ এসব প্রশ্নের সদুত্তর দিতে বাধ্য থাকেন।

খ. নিন্দাসূচক প্রস্তাব (Vote of Censure ) : সরকারের কোনো বিশেষ নীতি, বা সম্পাদিত কাজের জন্য কমন্সসভা মন্ত্রীদের বিরুদ্ধে নিন্দাসূচক প্রস্তাব উত্থাপন করতে পারেন। প্রস্তাবটি গ্রহণের জন্য সংখ্যাগরিষ্ঠের সমর্থন দরকার হয়। সাধারণত বিরোধী দলের সদস্যগণ এ ধরনের প্রস্তাব উত্থাপন করে থাকেন ।

গ. অনাস্থা প্রস্তাব (Vote of no confidence) : মন্ত্রীদের দায়িত্বশীলতা কার্যকর করার সর্বাপেক্ষা বড় অস্ত্র হলো কমন্সসভায় অনাস্থা প্রস্তাব উত্থাপন করা। কোনো একজন বিশেষ মন্ত্রী কিংবা সমগ্র সরকারের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব আনীত হতে পারে। অনাস্থা প্রস্তাব গৃহীত হলে মন্ত্রিসভার পতন ঘটে।

ঘ. ছাটাই প্রস্তাব (Cut-Motion) : সরকার কর্তৃক উত্থাপিত কোনো বিল কিংবা ব্যয় মঞ্জুরির কোনো প্রস্তাবকে প্রত্যাখ্যান করে কমন্সসভা মন্ত্রীদের দায়িত্বশীলতাকে কার্যকর করতে পারে। এ ক্ষেত্রে সরকারের পরাজয় ঘটলে মন্ত্রিসভাকে হয় পদত্যাগ করতে হয় কিংবা পার্লামেন্ট ভেঙে দিয়ে নতুন সাধারণ নির্বাচনের মাধ্যমে জনমত যাচাইয়ের ব্যবস্থা করতে হবে। ঙ. মূলতবি প্রস্তাব (Adjournment motion ) : কমন্সসভা মুলতবি প্রস্তাব উত্থাপনের মাধ্যমে কেবিনেটের নীতির সমালোচনা করতে পারে। বিরোধী দলের সদস্যগণ কোনো না কোনো খসড়া আইনের উপর ব্যাপক আলোচনার জন্য এ প্রস্তাব উত্থাপন করতে পারে।

চ. বিতর্ক আলোচনা (Debate and Discussion) : ব্রিটিশ পার্লামেন্টের সদস্যগণ যেকোনো বিষয়ে আলাপ- আলোচনা ও বিতর্কে অংশগ্রহণ করতে পারে। এ ধরনের ক্ষেত্রে পার্লামেন্ট সরকারি কর্মকাণ্ড সম্পর্কে অবহিত হতে পারে এবং সরকারি অনিয়মের সমালোচনা করে।

ছ. বাজেট (Budget) : একটি নির্দিষ্ট সময়ের সরকারি আয়-ব্যয়ের হিস্সা পালন করেন, তেমনি মন্ত্রিসভা ভেঙে দিতে সরকার কমন্সসভায় বাজেট পেশ করে। কমন্সসভার সদস্যগণ বাজেটের উপর তার দপ্তর পরিবর্তন করতে পারেন। মন্ত্রীগণ মাধ্যমে কমন্সসভা সরকারকে কিছুটা নিয়ন্ত্রণ করে। দিলে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রী পদত্যাগ করেন। প্রধানমন্ত্রী নিজে মন্ত্রিসভা ভেঙে

জ. তদন্ত কমিটি (Enquiry Committee) : কমগসভা কেবিনেটের দুর্নীতি ও অনিয়মের কি করে। এ কমিটি কমপসভার কাছে প্রতিবেদন পেশ করে। এ প্রতিবেদনে অনিয়ম প্রমাণিত হলে কেবিনেটের জেনা ও মৃত্যু সবকিছুই

২. পার্লামেন্টারি কমিশনার ( Parliamentary Commssioner ) : কেবিনেটের উপর নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠার সালে পার্লামেন্টারি কমিশনার আইন (Parliamentary Commssioner Act) অনুযায়ী “পার্লামেন্টারি কমিশনার”-এর পদ করেন। করা হয়েছে। কমপসভার সদস্যগণ তাদের নির্বাচনি এলাকার সরকারের কার্যাবলি সম্পর্কে জনগণের অভিযোগ ঐ কমিশনারের কাছে পেশ করেন। পার্লামেন্টারি কমিশনার এসব অভিযোগ সম্পর্কে অনুসন্ধান করেন এবং তিনি তাঁর বার্ষিক প্রতিবেদন একটি সিলেক্ট কমিটির নিকট পেশ করেন।

৩. রাজনৈতিক সমাধান (Political Solution) : কেবিনেটকে নিয়ন্ত্রণ করার জন্য রাজনৈতিক পদ্ধতি অনেক বেশি কার্যকর। কেবিনেটের স্বৈরাচার বন্ধের জন্য বিরোধী দলসমূহ রাজনৈতিক বিক্ষোভ, প্রচারকার্য, মন্ত্রীদের জন্য বিরোধী কার্যকলাপ সম্পর্কে স্মারকলিপি পেশ ইত্যাদির মাধ্যমে কেবিনেটের বিরুদ্ধে জনমত গঠন করতে পারে।

পরিশেষে বলা যায়, ব্রিটেনে মন্ত্রিসভার দায়িত্বশীলতা কার্যকর করার জন্য যে সব পদ্ধতি উল্লেখ করা হলো, বর্তমানে নানা কারণে সেগুলো অকার্যকর হয়ে পড়েছে। সুশৃঙ্খল ও সুসংহত দলীয় ব্যবস্থার প্রবর্তন, প্রধানমন্ত্রীর পার্লামেন্ট ভেঙে দেওয়ার ক্ষমতা, নির্বাচনি এলাকার বিস্তৃতি প্রভৃতি কারণে কমন্সসভা মন্ত্রিসভাকে যথাযথভাবে নিয়ন্ত্রণ করতে পারে না। এ প্রসঙ্গে বার্চ (A. H. Birch) বলেছেন, “ব্রিটেনে বর্তমান রাজনৈতিক ব্যবস্থায় যৌথ দায়িত্বশীলতার নীতি আগের মতো কার্যকর নয়।” (The doctrine of collective responsibility does not occupy the place in the present political system that is commonly claimed for it. )

ব্রিটিশ মন্ত্রীদের দায়িত্বশীলতা কার্যকর করার উপায়সমূহ

Leave a Reply