প্রথাগত বিধানের সংজ্ঞা

প্রথাগত বিধানের সংজ্ঞা Definition of Convention

ব্রিটেনের শাসনব্যবস্থায় প্রথাগত বিধানসমূহ বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ স্থান অধিকার করে আছে। অধ্যাপক ডাইসি ( Prof. Diecy) সর্বপ্রথম “সাংবিধানিক প্রথা” (Conventions of the constitution) কথাটি ব্যবহার করেন। এর পূর্বে জন স্টুয়ার্ট মিল (John Stuart Mill) এগুলোকে “সংবিধানের অলিখিত বিধি” (Unwritten maxims of the constitution) হিসেবে উল্লেখ করেছেন। ব্রিটিশ সংবিধান বিশেষজ্ঞ অ্যানসন (Anson) এগুলোকে “সংবিধানের রীতি” (Customs of the constitution) বলে অভিহিত করেছেন। ব্রিটেনের অলিখিত সংবিধানের বিরাট অংশ অধিকার করে আছে প্রথাগত বিধানসমূহ। এডমান্ড বার্ক (Edmund Burke) এর মতে, এগুলো ব্রিটিশ সংবিধানের মূল চালিকা শক্তি (The motive power of the constitution)।

প্রথাগত বিধানের সংজ্ঞা Definition of Convention

প্রথাগত বিধান বলতে এমন কতকগুলো নিয়মকানুনকে বুঝায়, যেগুলো আইনের মর্যাদা লাভ না করেও শাসনকার্যে বাধ্যতামূলকভাবে গৃহীত হয় এবং শাসনব্যবস্থার অবিচ্ছেদ্য অংশে পরিণত হয়।

প্রখ্যাত সংবিধান বিশেষজ্ঞ এ. ভি. ডাইসি (A. V. Diecy) বলেছেন, “রাজশক্তির স্বেচ্ছাধীন ক্ষমতা প্রয়োগ করার পদ্ধতি নির্ধারণকারী নিয়মাবলি হলো প্রথাগত বিধান।” [Conventions are rules for determining the mode in which discretionary powers of the crown (or as the Ministers as the servants of the crown) ought to be exercised]. [A.V. Diecy, An Introduction to the Law of the Constitution p. 418]

অধ্যাপক অগ (Prof. Ogg)-এর মতে, “প্রথাগত বিধানসমূহ হলো সেই সকল বোঝাপড়া, আচরণ ও অভ্যাস যেগুলো কেবল সরকারি কর্তৃপক্ষের প্রকৃত সম্পর্ক এবং কার্যকলাপকে বহুলাংশে নিয়ন্ত্রণ করে।” (Conventions consist of understanding, practices and habits which alone regulate a large portion of the actual relations and operations of the public authorities.)

কে. সি. হোয়ার (K. C. Wheare) বলেন, “প্রথাগত বিধান বলতে শাসনব্যবস্থা সংক্রান্ত সেই সব নিয়মকানুনকে বোঝায় যেগুলো আইনের অংশ না হয়েও বাধ্যতামূলক বলে গৃহীত হয় এবং দেশের রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠানকে নিয়ন্ত্রণ করে এবং সুস্পষ্টভাবে সরকারি ব্যবস্থার অবিচ্ছেদ্য অংশে পরিণত হয়।” (By convention is meant a whole collection of rules which though not part of the law, are accepted as binding and whith regulate political institutions in a country and clearly form a part of the system of government.)–K, C. Wheare, Modern Constitutions p-118.

মার্শাল ও মুডি (G. Marshall and G. C. Moodi)-র মতে, “সাংবিধানিক প্রথাসমূহ বলতে আমরা সেইসব সাংবিধানিক আচরণ সংক্রান্ত নীতিসমূহকে বুঝি, যেগুলোকে সংবিধানের সাথে সংশ্লিষ্ট প্রত্যেক ব্যক্তিই মেনে চলতে বাধ্য; কিন্তু যেগুলো আদালত কর্তৃক বলবৎযোগ্য নয়, যদিও আদালত এগুলোর অস্তিত্ব স্বীকার করে।” (By the conventions of the constitution we mean certain rules of the constitutional behaviour, which are considered to be binding by and upon those

who operate the constitution, but which are not enforced by courts, although the courts may recognize their existence.)-M. Marshall and G.C Moodie, Some Problems of the Constitution..

ওয়েড এবং ফিলিপস (Wade and Phillips ) -এর মতে, প্রথাগত বিধানসমূহ হলো রীতিনীতি এবং প্রয়োজনীয়তার সংমিশ্রণে গড়ে ওঠা নিয়মাবলির সমষ্টি। কিন্তু অনেক ক্ষেত্রে এগুলোর উৎস হলো মানুষের সুস্পষ্ট মতৈক্য। (Conventions are a mixture of rules based on custom and expediency, but sometimes their source is expressed agreement) [Wade and Phillips. Constitutional Law. pp-10-11:]

এডমন্ড বার্ক (Edmund Burke) বলেছেন, “আইনের বিধানসমূহ কীভাবে প্রয়োগ করা হবে তা সাংবিধানিক প্রথাসমূহের মাধ্যমে নির্ধারিত হয়। এগুলো হলো সংবিধানের মূল চালিকাশক্তি।” (The conventions of the constitution determine the manner in which rules of law which they presuppose, are applied, so they are, in fact, the motive power of the constitution.)

সুতরাং বলা যায় প্রথাগত বিধান বলতে শাসনব্যবস্থা সম্পর্কিত এমন সব অলিখিত নিয়ম-পদ্ধতিকে বোঝায়, যা পারস্পরিক বোঝাপড়া ও চুক্তির মাধ্যমে গড়ে উঠেছে এবং যা শাসন পরিচালনা কার্যে সম্পৃক্ত সমস্ত ব্যক্তি বাধ্যতামূলক বলে স্বীকার করে নিয়েছে।

প্রথাগত বিধানের বৈশিষ্ট্য Characteristics of the Conventions

প্রথাগত বিধানের কয়েকটি বৈশিষ্ট্য লক্ষ করা যায়। এগুলো নিম্নরূপ :

ক. প্রচলিত প্রথা থেকে উৎপত্তি : সুদীর্ঘকাল ধরে বিনের মধ্য দিয়ে প্রচলিত প্রথার ভিত্তিতে প্রথাগত বিধান গড়ে ওঠে, উদাহরণস্বরূপ বলা যায় যে, আগে মন্ত্রিসভার বৈঠকে রাজা উপস্থিত থাকতেন এবং সভাপতিত্ব করতেন। হ্যানোভার বংশীয় রাজা প্রথম ও দ্বিতীয় জর্জ ইংরেজি ভাষা জানতেন না, তাই তাঁরা মন্ত্রিসভার বৈঠকে উপস্থিত হতেন না এবং সভাপতিত্ব করতেন না। এ অবস্থায় মন্ত্রিসভার সবচেয়ে বয়োজ্যেষ্ঠ সদস্য সভাপতিত্ব করতেন। ব্রিটিশ শাসনব্যবস্থায় এভাবে প্রধানমন্ত্রী পদের সূচনা হয়েছে এবং মন্ত্রিসভার বৈঠকে রাজার অনুপস্থিতি একটি প্রথাগত বিধান হিসেবে স্বীকৃতি লাভ করে।

খ. পরিবর্তনশীলতা ও অনিশ্চয়তা : প্রথাগত বিধানসমূহ যুগের পরিবর্তনের সাথে সঙ্গতি রক্ষা করে গড়ে উঠেছে। তাই সেগুলো প্রকৃতিগতভাবে বিশেষ অনিশ্চিত ও পরিবর্তনশীল বলে বিবেচিত হয়। যেহেতু এগুলো প্রথার উপর ভিত্তি করে গড়ে ওঠে, সেহেতু নতুন প্রথার উৎপত্তির ফলে পুরাতন রীতিনীতির পরিবর্তন অবশ্যম্ভাবী হয়ে ওঠে। তাছাড়া কোনটি প্রথা আর কোটি সাংবিধানিক রীতিনীতি তা নির্ধারণ করা কষ্টকর হয়ে দাঁড়ায়।

গ. আদালত কর্তৃক বলবৎযোগ্য নয় : প্রথাগত বিধানসমূহ আদালত কর্তৃক বলবৎযোগ্য নয়। আইন ভঙ্গ করলে আইন ভঙ্গকারীকে শাস্তি পেতে হয়। কিন্তু প্রথাগত বিধান ভঙ্গ করা হলে সে রকম কোনো শাস্তি পেতে হয় না। এই কারণে শাসন কর্তৃপক্ষ সেগুলোকে আবশ্যিকভাবে মেনে নিতে বাধ্য নন ।

আইন প্রথাগত বিধানের মধ্যে পার্থক্য Distinction between Laws and Conventions

আইন ও প্রথাগত বিষানের মধ্যে মৌলিক পার্থক্য রয়েছে। গতীর্ণ অর্থে আইন হলো মানুষের বাহ্যিক আচরণ ও সামাজিক সম্পর্ক নিয়ন্ত্রণ করার জন্য সার্বভৌম রাজনৈতিক কর্তৃপক্ষ কর্তৃক রচিত ও বিধিবদ্ধ কতকগুলো নিয়মকানুন এবং এগুলো ভঙ্গ করা হলে শান্তি পেতে হয়। সুতরাং আইনানুগ ও আনুষ্ঠানিক দৃষ্টিকোণ থেকে আইন ও প্রথাগত বিধানের পার্থক্য নিম্নে আলোচনা করা হলো।

ক. উদ্ভবগত পার্থক্য : আইনগতভাবে গঠিত একটি সংস্থা কর্তৃক আইন প্রণীত হয়, আইনসভাই হলো আইনের সর্বপ্রধান উৎস। কিন্তু প্রথাগত বিধান কোনো সংস্থা কর্তৃক প্রণীত হয় না। দীর্ঘকালের আচার-আচরণ ও বিশেষ প্রয়োজন পূরণের জন্য

খ. নিশিবন্ধতা সংক্রান্ত পার্থক্য : আইনগুলো সুবিন্যস্তভাবে লিখিত অবস্থায় থাকে, আইনসভার সদস্যগণ ব্যাপক আলাপ- আলোচনা ও পর্যালোচনার পর ভোটাভুটির মাধ্যমে আইন পাস করেন। অপরদিকে প্রথাগত বিধান হলো অলিখিত ব্যবহারিক নিয়ম নীতি, যার পিছনে জনগণের মৌন সমর্থন আছে।

গ. সুস্পষ্টতা সুনির্দিষ্টতার পার্থক্য : আইন লিখিত থাকে বলে তা মোটামুটিভাবে সুস্পষ্ট ও সুনির্দিষ্ট হয়। কিন্তু প্রথাগত বিধানসমূহ আচার-ব্যবহার, রীতিনীতি ইত্যাদির ভিত্তিতে গড়ে ওঠে বলে সেগুলো অস্পষ্ট ও অনির্দিষ্ট প্রকৃতি সম্পন্ন।

ঘ. প্রণয়নের পদ্ধতিগত পার্থক্য : আইন প্রণয়নের কতকগুলো সুনির্দিষ্ট পদ্ধতি রয়েছে। আইনসভাই আইন প্রণয়নে অগ্রণী ভূমিকা পালন করে। কিন্তু প্রথাগত বিধানসমূহ কোনো নির্দিষ্ট সময়ে একটি নির্দিষ্ট পদ্ধতি অবলম্বনে তৈরি হয়নি। প্রথা দীর্ঘদিনের অভ্যাসের মাধ্যমে ধীরে ধীরে গড়ে ওঠে।

তা পরিবর্তন পদ্ধতির পার্থক্য : আইনের উৎপত্তি ও পরিবর্তন সকলের চোখের সামনে এবং সচেতনভাবে হয়ে থাকে। আবার অনেক সময় প্রয়োজনের তাগিদে আইন পরিবর্তন অতিদ্রুত সম্পাদন করা হয়। কিন্তু প্রথাগত বিধানের উৎপত্তি ও পরিবর্তন অবচেতনভাবে এবং ধীরে ধীরে হয়ে থাকে।

চ. সুবিধাগত পার্থক্য : আইন প্রণীত হয় জনগণের সুবিধা-অসুবিধার কথা চিন্তা করে। আইন প্রণয়নের ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট পরিকল্পনা অনুযায়ী অগ্রসর হওয়া সম্ভব। কিন্তু সুবিধা অনুযায়ী হঠাৎ প্রথাগত বিধান গড়ে তোলা যায় না। প্রকৃতপক্ষে প্রথাগত বিধান দীর্ঘকালের বিবর্তনের ফল।

ছ. মর্যাদাগত পার্থক্য : আইন মেনে চলা সকলের জন্য বাধ্যতামূলক। আইন ভঙ্গ করলে শাস্তি পেতে হয়। অপরদিকে, প্রথাগত বিধান মেনে চলা বাধাতমূলক নয়, স্বেচ্ছাধীন প্রথা ভঙ্গ করলে কোনো শাস্তি পেতে হয় না। তাই আইনের মর্যাদা প্রথাগত বিধানের তুলনায় অনেক বেশি।

জ. আইন আদালত কর্তৃক বলবৎযোগ্য : আইন আদালত কর্তৃক বলবৎযোগ্য। আইন অমান্য করলে অভিযুক্ত ব্যক্তিকে আদালত শাস্তি দিতে পারে। কিন্তু প্রথাগত বিধানসমূহ আদালত কর্তৃক স্বীকৃত নয়, সুতরাং প্রথাগত বিধানসমূহ লঙ্ঘনকারীকে শাস্তি দেওয়ার কোনো ব্যবস্থা নেই।

ঝ. সংক্ষিপ্ততার ক্ষেত্রে পার্থক্য : আইনকে যতদূর সম্ভব সংক্ষিপ্ত ও জটিলতা মুক্ত করে তৈরি করা হয়। এর অন্যতম কারণ হলো যাতে সহজে আইন ভাঙ্গকারীকে চিহ্নিত করা যেতে পারে। কিন্তু প্রথাগত বিধানকে সংক্ষিপ্ত ও সহজ করে গড়ে তোলার দায়িত্ব কেউ নেয় নি। আইভর জেনিংস (lvor Jennings) বলেন যে, আইনকে সংক্ষিপ্তভাবে বিন্যস্ত করা যায়। অপরদিকে প্রথাকে সংক্ষিপ্তভাবে বিন্যস্ত করা যায় না।

ঞ. প্রয়োগগত পার্থক্য : আইনের প্রয়োগ সকল ক্ষেত্রে একইভাবে হয়। কিন্তু প্রথাগত বিধান প্রয়োগের ক্ষেত্রে ভিন্নতা পরিলক্ষিত হয়। উদাহরণস্বরূপ নির্বাচনে শাসক দলের পরাজয় ঘটলে মন্ত্রিসভা পদত্যাগ করতে পারে কিংবা কমন্সসভার আস্থা ভোটের জন্য অপেক্ষা করতে পারে।

ট. প্রাধান্যগত পার্থক্য : আইন ও প্রথার মধ্যে বিরোধের ক্ষেত্রে আদালত আইনের প্রাধান্যই স্বীকার করে। আবার আইনগত দৃষ্টিকোণ থেকে বিচার করলে প্রথাগুলো সম্পূর্ণভাবেই আইনের অনুগত ।

বর্তমানে আইন ও প্রথাগত বিধানের মধ্যে তেমন কোনো উল্লেখযোগ্য পার্থক্য আছে বলে অনেকে মনে করেন না। আইভর জেনিংস (Ivor Jennings) এর মতে, আইন ও প্রথাগত বিধানের মধ্যে পার্থক্য অনেকটা পরিভাষাগত বিষয়। (In practice the two are inextricably mixed and many conventions are as important as rules of law.) বস্তুত উদ্দেশ্য ও প্রকৃতিগত বিচারে উভয়ের মধ্যে তেমন কোনো পার্থক্য নেই ।

ঠ. উভয়ই সুস্পষ্ট সুনির্দিষ্ট : প্রথাগত বিধানসমূহ সব সময়ই যে অস্পষ্ট ও অনির্দিষ্ট হবে এমন কোনো কথা নেই। ব্রিটেনে এমন কতকগুলো প্রথা রয়েছে যেগুলো আইন অপেক্ষা অনেক বেশি সুস্পষ্ট ও সুনির্দিষ্ট। উদাহরণস্বরূপ—১৯৩১ সালে প্রণীত ওয়েস্ট মিনস্টার আইনের মুখবন্ধের কথা বলা যায়। এখানে ব্রিটেনের সাথে ডোমিনিয়নের পারস্পরিক সম্পর্ক বিষয়ে যেসব প্রথার কথা বলা হয়েছে সেগুলো প্রথাগত আইনের তুলনায় অনেক বেশি সুস্পষ্ট, সুনির্দিষ্ট ।

ড. কতকগুলো আইন বলবৎযোগ্য নয় : ব্রিটেনে এমন কতকগুলো আইন আছে, যেগুলো আদালত কর্তৃক স্বীকৃত ও রক্ষিত হয় না। উদাহরণস্বরূপ ১৯১১ এবং ১৯৪৯ সালের পার্লামেন্ট আইনের কথা বলা যায়। এই আইন দুটির কতকগুলো বিষয়ে কমন্সসভার স্পীকারের সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত এবং এসবক্ষেত্রে স্পীকারের সিদ্ধান্ত আদালতের এখতিয়ার বহির্ভূত।

ঢ. মর্যাদাগত পার্থক্য ঠিক নয় : সাংবিধানিক প্রথার মর্যাদার তুলনায় আইনের মর্যাদা অনেক বেশি— একথাও পুরোপুরি সত্য নয়। ব্রিটিশ শাসনব্যবস্থায় গুরুত্বপূর্ণ প্রথাসমূহ আইনের মতোই মর্যাদা পেয়ে থাকে। উদাহরণস্বরূপ-রাজা বা রানীর সাথে কেবিনেটের সম্পর্ক সংক্রান্ত সাংবিধানিক প্রথার কথা বলা যায় ।

ণ. পরস্পরের উপর নির্ভরশীল : আইন ও প্রথাগত বিধান বহুলাংশে পরস্পরের উপর নির্ভরশীল, আইভর জেনিংস (Ivor Jennings) এর মতে, “সাংবিধানিক প্রথার বিকাশ ঘটে লিখিত সংবিধানে। প্রথমে সাংবিধানিক প্রথা গড়ে ওঠে আইনের উপর ভিত্তি করে। আবার এগুলো প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর আইনের ভিত্তি হিসেবে কাজ করে।” (Though the conventions are built in the first instance on the foundation of law, when once they have been established they tend to form the basis of law).

ত. পার্থক্য করা কঠিন : আইভর জেনিংস (Ivor Jennings) এর মতে, আইন ও প্রথার মধ্যে তেমন কোনো পার্থক্য নেই। তাঁর ভাষায়, “In short, the conventions are not really very different from laws. Indeed, it is frequently difficult to place a set of rules in one class or the other.”

থ. উভয়ই পরিবর্তনশীল : আইন সুনির্দিষ্টভাবে লিখিত থাকে বলেই তা সব সময় অপরিবর্তনীয় হবে এমন কোনো কথা নেই। প্রয়োজনের তাগিদে নির্দিষ্ট পদ্ধতিতে পার্লামেন্ট আইন পরিবর্তন করতে পারে। তেমনি পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে প্রথার পরিবর্তন হয় ।

প. উভয়ই জনগণের সম্মতির উপর প্রতিষ্ঠিত : উপযোগিতার উপলব্ধি থেকেই আইন ও প্রথার প্রতি জনগণের শ্রদ্ধা ও সমর্থনের সৃষ্টি হয়। আইন জনস্বার্থ বিরোধী হলে জনগণ সংশ্লিষ্ট আইনের বিরোধিতা করতে দ্বিধাবোধ করে না। প্রথার মতো আইনের কার্যকারিতাও জন সমর্থনের উপর নির্ভরশীল।

পরিশেষে বলা যায় আইন ও প্রথাগত বিধানের মধ্যে কার্যকরণগত তেমন কোনো পার্থক্য নেই, উভয়ের মধ্যে পার্থক্য মূলত মনস্তাত্ত্বিক। সরকারি কাজ-কর্ম পরিচালনা ও নিয়ন্ত্রণের ক্ষেত্রে উভয়ের ভূমিকা অনস্বীকার্য।

Leave a Reply