সরকারের চতুর্থ অঙ্গ হিসেবে নির্বাচকমণ্ডলী Electorate as the Fourth Organ of Government
প্রখ্যাত রাষ্ট্রবিজ্ঞানী ডব্লিউ. এফ. উইলোবি (W. F. Willoughby) নির্বাচকমণ্ডলীকে সরকারের চতুর্থ অঙ্গ হিসেবে অভিহিত করেছেন। তাঁর মতে, নির্বাচকমণ্ডলী রাষ্ট্রের রাজনৈতিক ব্যবস্থার একটি শাখা বা অঙ্গই নয়, বরং এটার কতিপয় সুনির্দিষ্ট, সুস্পষ্ট ও স্বতন্ত্র কার্যও রয়েছে। তাছাড়া নির্বাচকমণ্ডলীর সাথে জড়িত সমস্যাদি যেমন : কীভাবে নির্বাচকমণ্ডলীকে সংগঠিত করতে হবে, এটার ক্ষমতা ও কর্তব্যই বা কী রকম হবে, এটার কর্ম পদ্ধতি কেমন হবে, সরকারের অন্যান্য শাখার সাথে এর সম্পর্ক কেমন হবে ইত্যাদির সমাধান একান্তভাবে কাম্য। আর এর জন্য প্রয়োজন নির্বাচকমণ্ডলীকে একটি স্বতন্ত্র শাখা হিসেবে গণ্য করে এর বিষয়বস্তু ও সমস্যাদিকে আলাদাভাবে অধ্যয়ন করা।
নির্বাচকমণ্ডলীকে সরকারের চতুর্থ অঙ্গ হিসেবে গণ্য করার ক্ষেত্রে আমরা নিম্নোক্ত দুটি দৃষ্টিভঙ্গি গ্রহণ করতে পারি। যেমন : @ আমরা নির্বাচকমণ্ডলীকে সরকারি যন্ত্রের এক অবিচ্ছেদ্য অংশরূপে মনে করতে পারি। এ ধারণা অনুসারে নির্বাচকমণ্ডলীকে সরকারের অন্যান্য শাখা হতে পৃথক হিসেবে ভাবা যায় না । সরকারি যন্ত্র বলতে যা বুঝায় তার বাইরে নির্বাচকমণ্ডলীর অবস্থান বলে আমরা মনে করতে পারি ৷
তবে প্রতিনিধিত্বশীল শাসনব্যবস্থার ক্ষেত্রে এটিকে সরকারের বাইরের কোনো শাখা হিসেবে গণ্য করার ক্ষেত্রে কিছু বাস্তব অসুবিধা পরিলক্ষিত হয়। কাজেই প্রথমোক্ত দৃষ্টিভঙ্গি গ্রহণ করাই অধিকতর যুক্তিসঙ্গত। কিন্তু নির্বাচকমণ্ডলীর কার্যাবলির প্রতি দৃষ্টিপাত করলে এটিকে সরকারের একটি স্বতন্ত্র শাখা হিসেবে গণ্য করার সপক্ষে কোনো বাধা থাকে না। বিশেষ করে প্রতিনিধিত্বশীল সরকার ব্যবস্থায় নির্বাচকমণ্ডলীকে সরকারের চতুর্থ অঙ্গ হিসেবে গণ্য করা অধিকতর যুক্তিসঙ্গত। এ প্রসঙ্গে অধ্যাপক গার্নার (Prof. Garner) যথার্থই বলেছেন, “The electorate is not only the body of citizens which in most democratic states determines in the last analysis, the form of government of the state and chooses. Those who guide and direct its affairs, but in modern democracies it has, in the opinion of many writers acquired the character of an organ itself.”