Table of Contents
Toggleহুদলীয় ব্যবস্থার দোষ-গুণ আলোচনা কর । Discuss merits and demerits of multi party system
Multi Party System
একটি রাষ্ট্রে দুটির অধিক রাজনৈতিক দল সরকারি ক্ষমতা লাভের লড়াইয়ে কার্যকর ভূমিকা পালন করলে তাকে বহুদলীয় ব্যবস্থা বলে । বহুদলীয় ব্যবস্থা জাতি, ধর্ম, ভাষা বা শ্রেণির ভিত্তিতে গড়ে উঠতে পারে। এ ব্যবস্থায় দলগুলো নিজ নিজ মতাদর্শ, নীতি ও কর্মসূচি অনুযায়ী নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে। নির্বাচনে কোনো দল সংখ্যাগরিষ্ঠ আসনে জয়ী হলে সেই দলই সরকার গঠন করে। তবে বহুদলীয় ব্যবস্থায় কোনো দলের পক্ষে এককভাবে নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করা সম্ভব হয় না। এর ফলে একাধিক দল মিলিত হয়ে সম্মিলিত সরকার (Coalition Government) গঠন করে। ফ্রান্স, ইতালি, বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তান, হল্যান্ড, বেলজিয়াম প্রভৃতি দেশে বহুদলীয় ব্যবস্থা বিদ্যমান ।
বহুদলীয় ব্যবস্থার গুণাবলি Merits of Multi-Party System
বহুদলীয় ব্যবস্থার বেশ কিছু গুণাবলি রয়েছে। নিম্নে বহুদলীয় ব্যবস্থার গুণাবলি আলোচনা করা হলো :
১. জনমতের প্রকৃত প্রকাশ : বহুদলীয় ব্যবস্থায় জনমতের প্রকৃত প্রকাশ ঘটে। কারণ জনগণের মতামত বহুমুখি ও বৈচিত্র্যময়। জনমতের উপর ভিত্তি করেই বহুদলীয় ব্যবস্থায় সরকার গঠিত হয়। বহুদলীয় ব্যবস্থা বহু মত ও পথের সন্ধান দেয় যা সুষ্ঠু জনমত গঠনে সহায়ক বলে বিবেচিত হয়।
২. সমস্যা সমাধান সহজ হয় : বহুদলীয় ব্যবস্থায় বিভিন্ন দল রাষ্ট্রের বিভিন্ন সমস্যা জনগণের সামনে তুলে ধরে। এ সকল সমস্যার দ্রুত সমাধানের লক্ষ্যে পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য দলগুলো সরকারের কাছে অনুরোধ জানায়। সরকার সেই সমস্যাগুলো অগ্রাধিকার ভিত্তিতে সমাধানের ব্যবস্থা করে।
৩. সরকারের স্বৈরাচারিতা প্রতিরোধ : এ ব্যবস্থায় কোনো দলই এককভাবে সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করতে সক্ষম হয় না। ফলে জনগণ সংখ্যাগরিষ্ঠ দলের স্বৈরাচারের আশঙ্কা থেকে মুক্ত থাকে। এভাবে বহুদলীয় ব্যৱস্থায় সংখ্যাগরিষ্ঠের স্বৈরাচার প্রতিরোধ করা যায়। এ ব্যবস্থায় কোনো দলই দলীয় একনায়কত্ব প্রতিষ্ঠা করতে পারে না ।
৪. রাজনৈতিক শিক্ষার বিস্তার : বহুদলীয় ব্যবস্থায় রাজনৈতিক দলগুলো তাদের নীতি ও কর্মসূচি জনগণকে অবহিত করে। ফলে জনগণের বিচার-বুদ্ধি বিকশিত হয়। সমাজের বহুমুখি সমস্যা সম্পর্কে বিভিন্ন দলের বিভিন্ন রকম আলাপ-আলোচনা ও মতামতের ফলে জনগণের রাজনৈতিক শিক্ষার বিস্তার ঘটে। এতে জনগণের স্বাধীন চিন্তা ও মতামতের প্রতিফলন ঘটে।
৫. সংখ্যালঘু শ্রেণির স্বার্থ সংরক্ষণ : বহুদলীয় ব্যবস্থায় একাধিক দলের সমন্বয়ে সরকার গঠিত হয়। ফলে এতে সংখ্যালঘু শ্রেণিও সরকার গঠনে অংশ নিয়ে স্বীয় স্বার্থ সংরক্ষণ করতে পারে ।
৬. প্রার্থী নির্বাচনে স্বাধীনতা : বহুদলীয় ব্যবস্থায় জনগণ নিজেদের পছন্দ মতো যে কোনো রাজনৈতিক দলের প্রার্থীকে ভোট দিতে পারে। তাই এতে প্রার্থী বাছাই এবং নির্বাচনে নাগরিকদের সর্বাধিক স্বাধীনতা থাকে। রামজে ম্যুর (Ramsay Muir) এর মতে, দুটি রাজনৈতিক দলের মধ্যে নাগরিকদের পছন্দকে সীমাবদ্ধ রাখা উচিত নয়।
৭. কায়েমি স্বার্থের বিকাশ ঘটে না : বহুদলীয় ব্যবস্থায় কোনো দলই অপ্রতিহত প্রাধান্য বিস্তার করতে পারে না। এখানে একদলীয় ব্যবস্থার মতো কায়েমি স্বার্থের সৃষ্টি হয় না। কোনো দলের একক কর্তৃত্ব না থাকায় সংকীর্ণ দলীয় স্বার্থ বা কায়েমি স্বার্থের বিকাশ ঘটে না।
৮. যোগ্য ও মেধাবী ব্যক্তির মূল্যায়ন : বহুদলীয় ব্যবস্থায়, সৎ, যোগ্য ও মেধাবী নেতাদের মূল্যায়ন সম্ভব হয়। এ ব্যবস্থায় অনেক সময় দূরদর্শী, যোগ্য ও জনপ্রিয় নেতাদের নিয়ে সরকার গঠিত হয়। এতে রাষ্ট্র ও জনগণ যোগ্য ও মেধাবী নেতাদের সেবা লাভের সুযোগ পায় ।
৯. বহুজাতিক রাষ্ট্রের পক্ষে উপযোগী : বহুদলীয় ব্যবস্থা বহুজাতিক রাষ্ট্রের পক্ষে অধিকতর উপযোগী। এ সব দেশের জনগণ ধর্ম, বর্ণ এবং বিভিন্ন জাতি গোষ্ঠীতে বিভক্ত। বিভিন্ন জাতি গোষ্ঠীর সমানুপাতিক প্রতিনিধিত্বের জন্য বহুদলীয় ব্যবস্থা কার্যকর ও ফলপ্রসূ।
১০. জাতীয় স্বার্থ সংরক্ষণ : বহুদলীয় ব্যবস্থায় রাজনৈতিক দলগুলো বৃহত্তর জাতীয় স্বার্থের ভিত্তিতে নীতি নির্ধারণ ও কর্মসূচি প্রণয়ন করে। আইনসভায় বহু রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিত্ব থাকায় বিভিন্ন দল ও গোষ্ঠীর মতামত প্রতিফলিত হয়। এর ফলে জাতীয় স্বার্থ সংরক্ষিত হওয়ার সুযোগ সৃষ্টি হয়।
বহুদলীয় ব্যবস্থার দোষাবলি Demerits of Bi-party System
বহুদলীয় ব্যবস্থার অসংখ্য গুণাবলি থাকলেও এর কতিপয় ত্রুটি পরিলক্ষিত হয়। নিম্নে বহুদলীয় ব্যবস্থার ত্রুটিগুলো আলোচনা করা হলো :
১. দুর্বল ও ক্ষণস্থায়ী সরকার : বহুদলীয় ব্যবস্থায় সরকার সাধারণত দুর্বল ও ক্ষণস্থায়ী হয়। কারণ এতে কখনো কখনো একাধিক দল নিয়ে সরকার গঠিত হয়। ফলে যে কোনো একদলের সমর্থন হারালে সরকারের পতন ঘটে।
২. দুর্নীতির প্রসার ঘটে : বহুদলীয় ব্যবস্থায় দুর্নীতির প্রসার ঘটে, এককভাবে কোনো দল সরকার গঠনে ব্যর্থ হলে অন্যান্য দলের সদস্যদের উৎকোচ প্রদান, মন্ত্রিত্ব দান এবং অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা দিয়ে দলীয় সমর্থন আদায় করা হয় ।
৩. জাতীয় ঐক্য বিনষ্ট : বহুদলীয় ব্যবস্থায় জাতি বিভিন্ন মতাদর্শকে কেন্দ্র করে বিভক্ত হয়ে পড়ে। এটি রাজনৈতিক ব্যবস্থায় না। দলাদলি, রেষারেষি ও দ্বন্দ্ব-সংঘাত বৃদ্ধি করে। ফলে তীয় ঐক্য ও সংহতি বিনষ্ট হয় ।
৪. শক্তিশালী বিরোধী দলের অভাব : বহুদলীয় ব্যবস্থায় শক্তিশালী বিরোধী দলের অভাব পরিলক্ষিত হয়। এতে বিভিন্ন দলের নীতি, আদর্শ ও কর্মসূচির ভিন্নতা থাকায় বিরোধী দলগুলো ঐক্যবদ্ধ ভূমিকা পালন করতে পারে না। শক্তিশালী বিরোধী দল না থাকায় সরকার স্বৈরাচারী হয়ে ওঠে ।
৫. প্রার্থী বাছাইয়ে অসুবিধা : বহুদলীয় ব্যবস্থায় জনগণ প্রার্থী বাছাইয়ের ক্ষেত্রে অসুবিধায় পড়ে। কারণ বিভিন্ন দলের মধ্যে কে কোন দলকে সমর্থন করবে সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা জনগণের পক্ষে কষ্টকর হয়ে পড়ে। তাছাড়া বিভিন্ন মত ও প্রার্থীর মধ্য থেকে যোগ্য প্রার্থী বাছাই করতে জনগণ অসুবিধার সম্মুখীন হয় ।
৬. রাজনৈতিক অস্থিরতা : এ ধরনের ব্যবস্থায় সারাক্ষণ রাজনৈতিক অস্থিরতা বিরাজ করে। দেশে বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি হয় অযথা অশান্তি ও উত্তেজনা দেখা দেয়। এর ফলে প্রশাসনে অচলাবস্থা সৃষ্টি হয় এবং জাতীয় উন্নয়ন বাধাগ্রস্ত হয়।
৭. সামরিক হস্তক্ষেপ : বহুদলীয় ব্যবস্থায় ঘন ঘন সরকারের উত্থান-পতন ঘটতে থাকে। দলাদলি, রেষারেষি, বিশৃঙ্খলা ও হিংসাত্মক কার্যকলাপ রাজনৈতিক ব্যবস্থাকে অস্থিতিশীল করে তোলে। এই সুযোগে সামরিক বাহিনী রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা দখল করে ।
৮. দ্রুত সিদ্ধান্ত গ্রহণে সমস্যা : বহুদলীয় ব্যবস্থায় নির্বাচন এবং জাতীয় সংকটকালে রাজনৈতিক উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। জরুরি অবস্থায় দ্রুত সিদ্ধান্ত গ্রহণ সম্ভব হয় না। কোনো বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণে বিভিন্ন দলের সাথে আলাপ-আলোচনা, ইত্যাদিতে প্রচুর সময় ব্যয় হয়। ফলে দেশে অচলাবস্থার সৃষ্টি হয়।
J.
রাজনৈতিক দল ত্যাগ : বহুদলীয় ব্যবস্থায় ঘন ঘন দল পরিবর্তন একটি নিত্য নৈমিত্তিক ঘটনা। কিছু সুবিধাবাদী ও স্বার্থান্বেষী ব্যক্তি নির্বাচিত হওয়ার পর ব্যক্তিগত স্বার্থ সাধনের জন্য ঘন ঘন দল পরিবর্তন করেন। এতে রাজনৈতিক সুযোগ-সুবিধা স্থান পায় এবং রাজনৈতিক পরিবেশ কলুষিত হয়ে পড়ে।
১০. সংসদীয় শাসনব্যবস্থার অনুপযোগী : এরূপ ব্যবস্থা সংসদীয় শাসনব্যবস্থার জন্য উপযোগী নয়। সংসদীয় শাসনব্যবস্থায় দ্বি-দলীয় ব্যবস্থাই উত্তম। কেননা সংসদীয় ব্যবস্থায় একদল সরকার গঠন করলে অপর দল বিরোধী দলের ভূমিকা পালন করে। ফলে সরকার স্থায়ী ও স্থিতিশীল হয়। উন্নয়নশীল দেশসমূহে বহুদলীয় ব্যবস্থা বিদ্যমান থাকায় সংসদীয় শাসনব্যবস্থা বার্থতায় পর্যবসিত হয়েছে।
দলীয় ব্যবস্থার সুবিধা Merits of Party System
দলীয় ব্যবস্থার সুবিধাসমূহ নিয়ে আলোচনা করা হলো :
১. সরকারকে স্থিতিশীল রাখে : কোনো রাষ্ট্রের দলীয় ব্যবস্থা সরকারকে শক্তিশালী ও স্থিতিশীল করে তোলে। রাজনৈতিক দল সরকারের শাসন বিভাগ ও আইন বিভাগের বিভিন্ন কার্যক্রমের পক্ষে জনমত গঠন করে শাসন ব্যবস্থাকে স্থিতিশীল রাখে।
২. বিভিন্ন বিভাগের মধ্যে সংহতি রক্ষা করে : দলীয় ব্যবস্থা সরকারের বিভিন্ন বিভাগের মধ্যে সংহতি রক্ষা করে। রাজনৈতিক দল সরকারের আইন বিভাগ, শাসন বিভাগ ও বিচার বিভাগের মধ্যে সার্বক্ষণিক সহযোগিতার পরিবেশ সৃষ্টি করে। যাতে এদের মধ্যে অচলাবস্থা দেখা না দেয় সেদিকে দৃষ্টি রাখে।
৩. জাতীয় সমস্যার সমাধান : বিভিন্ন রাজনৈতিক দল দলীয় ব্যবস্থার সুযোগে বিভিন্ন বিষয়ে জাতীয় সমস্যা চিহ্নিত করে এবং সেগুলো সমাধানের জন্য বাস্তবমুখি কর্মসূচি গ্রহণ করে থাকে।
৪. সরকারের স্বৈরাচারিতা রোধ করে : বিরোধী দল সরকারের দোষ-ত্রুটি, ক্ষমতার অপব্যবহার, দুর্নীতি ও স্বজনপ্রীতির সমালোচনা করে জনগণকে সজাগ করে। এতে জনমতের সমালোচনার ভয়ে সরকার স্বৈরাচারী কর্মকাণ্ড থেকে বিরত থাকে ।
৫. অধিকার ও কর্তব্য সম্পর্কে সচেতন করে : দলীয় ব্যবস্থা দেশের জনগণকে তাদের অধিকার ও কর্তব্য সম্বন্ধে সচেতন করে তোলে। এর ফলে জনগণ তাদের অধিকার সম্পর্কে জানতে পারে। সরকার জনগণের অধিকারে হস্তক্ষেপ করতে সাহসী হয় না ।
দলীয় ব্যবস্থার অসুবিধা Demerits of Party System
দলীয় ব্যবস্থার অসুবিধাসমূহ নিচে আলোচনা করা হলো :
১. ব্যক্তিস্বাধীনতা খর্ব করে : সরকারের দলীয় ব্যবস্থার ফলে ব্যক্তিস্বাধীনতা খর্ব হয়। এটি দলীয় আনুগত্যের প্রতি অত্যধিক গুরুত্ব আরোপ করে বলে ব্যক্তিস্বাধীনতা বলতে কিছুই থাকে না।
২. রাষ্ট্রের জন্য বিপদজনক : দলীয় ব্যবস্থা অধিকাংশ সময় রাষ্ট্রের জন্য বিপদজনক হয়ে ওঠে, কেননা দলীয় কর্মীগণ তাদের নিজ নিজ দলের প্রতি অধিক অনুগত থাকে বলে রাষ্ট্রের প্রতি আনুগত্য কমে যায়। অনেক ক্ষেত্রে দেখা যায় জাতীয় স্বার্থের চেয়ে দলীয় স্বার্থ বড় হয়ে ওঠে। ফলে তা রাষ্ট্রের জন্য বিপদজনক হয় ।
৩. জ্ঞানী-গুণী ব্যক্তি দেশশাসনে বঞ্চিত হয় : দলীয় ব্যবস্থা জ্ঞানী-গুণী ব্যক্তিবর্গকে অনেক সময় দেশ শাসনে বঞ্চিত করে ৷ রাজনৈতিক দলের জ্ঞানী-গুণী ব্যক্তিগণ দলীয় শৃঙ্খলার স্বার্থে দলীয় সিদ্ধান্ত মেনে নেয় এবং দলের চাপে নিজস্ব স্বাধীন মতামত প্রকাশ করে না। ফলে তারা শাসনকার্যের দায়িত্ব পায় না।
৪. দুর্নীতির প্রশ্রয় দেয় দলীয় ব্যবস্থার কারণে সরকারের শাসনকার্যে উচ্চপদে অধিষ্ঠিত কর্মকর্তাগণ দুর্নীতির প্রশ্রয় দেয়। দলীয় সমর্থনপুষ্ট কর্মকর্তাগণ স্বীয় দলের সদস্যদেরকে অন্যায়ভাবে বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা প্রদান করে দুর্নীতি ও স্বজনপ্রীতির আশ্রয় গ্রহণ করে থাকে।
৫. অশান্তি এবং অস্থিরতা বাড়ে। দলীয় ব্যবস্থা বিভিন্ন দলের নেতা কর্মীদের মধ্যে হিংসা-বিদ্বেষ, হানাহানি ও শত্রুতার বিষবাষ্প ছড়িয়ে দেয়। বিশেষ করে নির্বাচনের সময় রাজনৈতিক দল প্রতিপক্ষকে অহেতুক আক্রমণ ও হেয় প্রতিপন্ন করে রাজনৈতিক পরিবেশকে দূষিত করে তোলে।