পারস্পরিক নিয়ন্ত্রণ ও ভারসাম্যের নীতি

পারস্পরিক নিয়ন্ত্রণ ও ভারসাম্যের নীতি

The Principle of Checks and Balance

ক্ষমতাস্বতন্ত্রীকরণ নীতির বিপরীত নীতি হলো পারস্পরিক নিয়ন্ত্রণ ও ভারসাম্যের নীতি। এ নীতির দ্বারা সরকারের তিনটি বিভাগের ক্ষমতা প্রয়োগের মধ্যে একটি ভারসাম্য সৃষ্টির চেষ্টা করা হয়। অর্থাৎ, যে প্রাতিষ্ঠানিক ব্যবস্থার মাধ্যমে সরকারের তিনটি বিভাগের প্রত্যেকটি এমন কতগুলে। আনুষ্ঠানিক উপায় লাভ করে যার দ্বারা উক্ত বিভাগটি অপর দুটি বিভাগ কর্তৃক স্ব স্ব সাংবিধানিক ক্ষমতার লঙ্ঘনকে নিবৃত করতে পারে, তাকে ‘নিয়ন্ত্রণ ও ভারসাম্য নীতি’ (Principle of Checks and Balance) বলা হয়। হ্যামিল্টন ও অন্যান্য বিশেষজ্ঞ এর মতে, “এ ব্যবস্থা এমনভাবে সরকারের আভ্যন্তরীণ কাঠামোর বিন্যাস করে, যাতে করে এর বিভিন্ন বিভাগ এদের পারস্পরিক সম্পর্কাদির মাধ্যমে অন্যান্য প্রত্যেক বিভাগকে এর নিজস্ব যথার্থ এখতিয়ারের মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখতে পারে” ।

বস্তুত কোনো সংবিধানে সরকারের বিভিন্ন বিভাগের মধ্যে ক্ষমতা পৃথক পৃথকভাবে বণ্টন করার যে নীতি গ্রহণ করা হয়, সে নীতিকে কার্যত বজায় রাখার, অর্থাৎ প্রত্যেক বিভাগকে স্ব স্ব এখতিয়ার লঙ্ঘন হতে নিবৃত রাখার লক্ষ্যেই ‘নিয়ন্ত্রণ ও ভারসাম্য নীতি’ একটি উপযোগী পন্থা হিসেবে গণ্য হয়। কোনো রাজনৈতিক ব্যবস্থায় নিয়ন্ত্রণ ও ভারসাম্য নীতি তখনই গৃহীত হয়, যখন কোনো কার্য পালনের দায়িত্ব কোনো এক ব্যক্তি বা বিভাগের হাতে সম্পূর্ণ ন্যস্ত করা হয় না, বরং বেশ স্বাধীন এমন অন্যান্য বিভাগকেও সে কার্য সম্পাদনের বিষয়ে অংশ বা নিয়ন্ত্রণ ক্ষমতা প্রদান করা হয়। আর এভাবে নিয়ন্ত্রণ আরোপের মাধ্যমে যে কোনো রাজনৈতিক ব্যবস্থায় ‘ভারসাম্য’ বজায় রাখা সম্ভব হয়ে থাকে ।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের শাসনব্যবস্থায় পারস্পরিক নিয়ন্ত্রণ ও ভারসাম্যের নীতির প্রয়োগ Aplication of the Principle of Checks and Balance in USA

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সংবিধানের তাত্ত্বিক ভিত্তি ‘ক্ষমতাস্বতন্ত্রীকরণ নীতি’র উপর প্রতিষ্ঠিত হলেও ব্যবহারিক ভিত্তি ‘ক্ষমতার নিয়ন্ত্রণ ও ভারসাম্য নীতি’র উপর প্রতিষ্ঠিত। যে কারণে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের শাসনব্যবস্থায় ক্ষমতা স্বতন্ত্রীকরণ নীতির সহিত নিয়ন্ত্রণ ও ভারসাম্য নীতি সম্পৃক্ত থেকে উক্ত শাসনব্যবস্থাকে একটি পৃথক বৈশিষ্ট্যমণ্ডিত করেছে। মার্কিন সংবিধানের বিভিন্ন অংশে এ নিয়ন্ত্রণ ও ভারসাম্য নীতির প্রতিফলন দেখতে পাওয়া যায়। অগ (Ogg)-এর মতে, “No feature of the American Government, national state often local, is more charactaritic than the seperation of powers, combined with precautionary checks and balances.” যে কারণে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে নিয়ন্ত্রণ ও ভারসাম্য নীতি এক গুরুত্বপূর্ণ স্থান দখল করে আছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের শাসনব্যবস্থায়ণ নিয়ন্ত্রণ ও ভারসাম্যের নীতিকে দুটি উপায়ে প্রয়োগ করা হয়েছে। যথা ঃ প্রতিষ্ঠানগত নিয়ন্ত্রণ ও ক্ষমতার ব্যবহার সংক্রান্ত নিয়ন্ত্রণ ।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সংবিধানে কীভাবে বিভিন্ন বিভাগের কার্যাবলির ক্ষেত্রে পারস্পরিক নিয়ন্ত্রণ ও ভারসাম্য প্রতিষ্ঠার চেষ্টা হয়েছে তা আলোচনা করতে হলে শাসন, বিচার ও আইন বিভাগের উপর পরস্পরের নিয়ন্ত্রণের বিষয়টি পৃথক পৃথকভাবে ভুলে ধরা প্রয়োজন। এ সম্পর্কে নিম্নে আলোচনা করা হলো :

১. আইন বিভাগ কর্তৃক শাসন বিভাগের উপর নিয়ন্ত্রণ : রাষ্ট্রপতি শাসন বিভাগের সর্বোচ্চ ক্ষমতার অধিকারী হলেও তাঁর ক্ষমতা অনেকক্ষেত্রে আইন বিভাগ তথা মার্কিন কংগ্রেস দ্বারা নিয়ন্ত্রিত। নিম্নে এ সম্পর্কে আলোকপাত করা হলো :

ক. শাসন বিভাগীয় প্রধান রাষ্ট্রপতি চার বছরের জন্য নির্বাচিত হলেও তাঁর কার্যকাল শেষ হবার পূর্বেই কংগ্রেস যে কোনো গুরুতর অপরাধের অভিযোগে ইমপিচমেন্টের মাধ্যমে রাষ্ট্রপতিকে অপসারণ করতে পারে ।

খ: মার্কিন রাষ্ট্রপতি সে দেশের সকল পদস্থ কর্মকর্তাকে নিয়োগ প্রদান করেন। তিনি যুক্তরাষ্ট্রীয় শাসন বিভাগের সকল কর্মচারী, রাষ্ট্রদূত, কেবিনেট সদস্য এবং যুক্তরাষ্ট্রের আদালতের বিচারপতিদের নিয়োগ প্রদান করেন। তবে রাষ্ট্রপতির নিয়োগ সম্পর্কিত ক্ষমতাকে কার্যকর করতে হলে সিনেটের সংখ্যাগরিষ্ঠ সদস্যের সমর্থনের প্রয়োজন হয়। যদি সিনেট রাষ্ট্রপতির এই নিয়োগকে অনুমোদন না করে তবে তা অবৈধ বলে বিবেচিত হয়। মার্কিন রাষ্ট্রপতি জর্জ বুশ প্রতিরক্ষা সচিব পদে জন টাওয়ার- এর নাম প্রস্তাব করেন। কিন্তু মার্কিন সিনেট সংখ্যাগরিষ্ঠ ভোটে তা বাতিল করে দেয়।

গ. নিজস্ব ক্ষমতায় কংগ্রেস আইন প্রণয়ন করতে পারে। আইন প্রণয়ন সংক্রান্ত বিষয়ে রাষ্ট্রপতির উত্থাপিত প্রস্তাবও কংগ্রেস বাতিল করতে পারে ।

ঘ. শাসন বিভাগের কার্য পরিচালনার জন্য যথেষ্ট পরিমাণ অর্থের প্রয়োজন। কিন্তু কংগ্রেসের অনুমোদন ব্যতীত জাতীয় বাজেট যেমন পাস হয় না, তেমনি কোনো কর ধার্য বা বিলোপ অথবা সরকারি তহবিল থেকে অর্থ ব্যয় করা সম্ভব নয়। এভাবে রাষ্ট্রপতির উপরে কংগ্রেস নিয়ন্ত্রণ আরোপ করে থাকে ।

ঙ. মার্কিন সিনেট রাষ্ট্রপতি, উপরাষ্ট্রপতি, বিচারপতি ও অন্যান্য উচ্চপদস্থ সরকারি কর্মচারীদের আনীত অভিযোগের বিচার করতে পারে। এক্ষেত্রে প্রতিনিধিসভা রাষ্ট্রপতির বিরুদ্ধে চার্টশিট প্রস্তুত করবে এবং সিনেট রাষ্ট্রপতি সংশ্লিষ্ট দোষে দোষী কি না তা দুই-তৃতীয়াংশের ভোটে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবে।

চ. রাষ্ট্রপতি কংগ্রেস প্রণীত আইনে ‘ভেটো’ প্রয়োগ করতে পারেন। কিন্তু মার্কিন কংগ্রেস দ্বিতীয় বার দুই-তৃতীয়াংশ সম্মতি সাপেক্ষে বিলটি পুনরায় পাস করার মাধ্যমে রাষ্ট্রপতির ভেটোকে বাতিল করে দিতে পারে। এক্ষেত্রে রাষ্ট্রপতি নিক্সনের ভেটোকে বাতিল করে কংগ্রেস ‘War powers act’ প্রণয়ন করে ।

ছ. আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে যে কোনো রাষ্ট্রের সাথে সন্ধি-চুক্তি সম্পাদনের ব্যাপারে মার্কিন রাষ্ট্রপতি চূড়ান্ত ক্ষমতার অধিকারী। কিন্তু তাঁর সম্পাদিত এসকল সন্ধি-চুক্তি কংগ্রেসের কক্ষ সিনেটের দুই-তৃতীয়াংশ সদস্যের সমর্থনে অনুমোদন না হলে কার্যকর হয় না। তৎকালীন রাষ্ট্রপতি উইলসন ভার্সাই সন্ধি এবং জাতিসংঘের চুক্তিপত্রে সই করেছিলন। কিন্তু মার্কিন সিনেট তা অনুমোদন করেনি।

জ. মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রপতি জরুরি পরিস্থিতিতে যুদ্ধ ঘোষণা করতে পারেন। তবে সেই ঘোষণা পরবর্তীতে আইনসভায় অনুমোদন করতে হয় ।

২. শাসন বিভাগ কর্তৃক আইন বিভাগের উপর নিয়ন্ত্রণ : আইন বিভাগ যেমন শাসন বিভাগকে বিভিন্ন ক্ষেত্রে নিয়ন্ত্রণ করে থাকে, তেমনি বিপরীতে শাসন বিভাগও আইন বিভাগকে কতিপয় ক্ষেত্রে নিয়ন্ত্রণ করে থাকে। নিম্নে এ সম্পর্কে আলোকপাত করা হলো :

ক. মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের আইন প্রণয়নের ক্ষমতা আইন বিভাগ তথা কংগ্রেসের উপর ন্যস্ত। রাষ্ট্রপতি কংগ্রেসে তাঁর অনুরোধ সংক্রান্ত বাণী (Presidencial Message) প্রেরণ করতে পারেন। কংগ্রেস রাষ্ট্রপতির এই বাণী আলোচনা করতে বাধ্য। তবে ঐ বাণীর বিষয়বস্তু প্রত্যাখানের ক্ষমতাও কংগ্রেসের রয়েছে।

খ. মার্কিন আইনসভা তথা কংগ্রেস প্রণীত আইন রাষ্ট্রপতির অনুমোদন ব্যতীত কার্যকর হয় না। রাষ্ট্রপতি কংগ্রেস প্রণীত যে কোনো আইন/ বিলে ভেটো (Veto) প্রয়োগের মাধ্যমে উক্ত আইনকে আটকে দিতে পারেন। যদিও মার্কিন কংগ্রেস দ্বিতীয় বার দুই-তৃতীয়াংশ সম্মতি সাপেক্ষে অনুমোদন করলে রাষ্ট্রপতি তাতে স্বাক্ষর করতে বাধ্য থাকেন, অথবা তাঁর অনুমতি ব্যতীত বিলটি আইনে পরিণত হয়। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক রাষ্ট্রপতি রুজভেল্ট ৩৭২ টি সাধারণ ভেটো এবং ২৬৩ টি পকেট ভেটো প্রদানের মাধ্যমে আইন বিভাগকে নিয়ন্ত্রণ করেছিলেন।

গ. মার্কিন রাষ্ট্রপতি যে কোনো জরুরি প্রয়োজনে কংগ্রেসের বিশেষ অধিবেশন আহ্বান করে থাকেন। এক্ষেত্রে তিনি কংগ্রেসের উভয় পরিষদের অধিবেশন আহ্বান করতে পারেন। রাষ্ট্রপতি উইলসন ১৯১৩ সালে কংগ্রেসের বিশেষ অধিবেশন আহ্ববান করেছিলেন ।

৩. বিচার বিভাগ কর্তৃক শাসন বিভাগের উপর নিয়ন্ত্রণ : বিচার বিভাগও শাসন বিভাগকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারে। এরূপ নিয়ন্ত্রণের সাংবিধানিক কৌশলসমূহ হলো :

ক. বিচার বিভাগও রাষ্ট্রপতির ক্ষমতাকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারে। রাষ্ট্রপতির কোনো নির্দেশ, তাঁর দ্বারা সম্পাদিত কোনো চুক্তি ও সন্ধির বৈধতা বিচারের ক্ষমতা সুপ্রিম কোর্টের হাতে ন্যস্ত। অর্থাৎ, রাষ্ট্রপতির এ সংক্রান্ত সাংবিধানিক এখতিয়ার বহির্ভূত বা আইনের যথাযথ পদ্ধতির বিরোধী হলে আদালত একে বাতিল ঘোষণা করতে পারে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিচার বিভাগীয় এ সাংবিধানিক প্রাধান্য রাষ্ট্রপতির কাজকে নিয়ন্ত্রণ করে থাকে। উদাহরণস্বরূপ ১৯৫২ সালে রাষ্ট্রপতি ইস্পাত কারখানা সরকার কর্তৃক দখলের আদেশ জারি করলে আদালত এ সংক্রান্ত আদেশকে বাতিল করে দেয়।

খ. মার্কিন রাষ্ট্রপতি সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতির নিকট শপথ গ্রহণ করে সংবিধানকে সমর্থন ও রক্ষা করতে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হন, যা মনস্তাত্ত্বিকভাবে রাষ্ট্রপতির উপর নৈতিক বাধা হিসেবে ক্রিয়াশীল থাকে।

গ. আদালত রীট জারি করে শাসন বিভাগের উপর চাপ সৃষ্টি করতে পারে।

৪. শাসন বিভাগ কর্তৃক বিচার বিভাগের উপর নিয়ন্ত্রণ : মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিচার বিভাগ স্বাধীনভাবে কাজ করার সুযোগ পায়। তাদের বেতন-ভাতা সহ অন্যান্য সুযোগ-সুবিধার জন্য অপর কোনো সংস্থার উপর নির্ভর করতে না হলেও কতিপয় ক্ষেত্রে শাসন বিভাগ বিচার বিভাগের উপর নিয়ন্ত্রণ আরোপ করে থাকে :

ক. মার্কিন রাষ্ট্রপতি মার্কিন বিচারপতিদের নিয়োগ করে থাকেন। যদিও এ নিয়োগ সিনেটের অনুমোদন সাপেক্ষে তথাপি এ নিয়োগের ক্ষেত্রে রাজনৈতিক বিচার বিবেচনার প্রভাবকে অস্বীকার করা যায় না। এর মাধ্যমে শাসন বিভাগ বিচার বিভাগের উপর নিয়ন্ত্রণ করে থাকে।

খ. মার্কিন রাষ্ট্রপতি ইমপিচমেন্ট ব্যতীত আদালত কর্তৃক যে কোনো শাস্তি বা দণ্ড মওকুফ, হ্রাস বা বাতিল করে দিতে পারে। এ ক্ষমতা প্রয়োগের ফলে বিচার বিভাগের কার্যক্রম রাষ্ট্রপতি তথা শাসন বিভাগ দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয়ে থাকে।

গ. রাষ্ট্রপতি আদালতের রায়কে কার্যকরী করতে অস্বীকৃতি জ্ঞাপন করে আদালতকে অসহায় অবস্থায় ফেলতে পারে ।

 আইন বিভাগ কর্তৃক বিচার বিভাগের উপর নিয়ন্ত্রণ : মার্কিন বিচার বিভাগের উপর কংগ্রেস বা আইন বিভাগের নিয়ন্ত্রণমূলক ক্ষমতা বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ :

ক. মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অধঃস্তন আদালতের গঠন, বিলোপ সাধন ও বিভিন্ন জাতীয় আদালতের এখতিয়ার কংগ্রেসের হাতে ন্যস্ত থাকে। এর ফলে বিচার বিভাগের উপর কংগ্রেসের নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠিত হয়ে থাকে।

খ. মার্কিন রাষ্ট্রপতি সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতিদের নিয়োগ প্রদান করলেও এ নিয়োগ কংগ্রেসের উচ্চকক্ষ সিনেটের অনুমোদন সাপেক্ষ। ফলে এক্ষেত্রে রাজনৈতিক বিচার বিবেচনার প্রভাবকে অস্বীকার করা যায় না।

গ. কংগ্রেস সুপ্রিম কোর্টের বিচারকদের সংখ্যা নির্ধারণ করতে পারে।

ঘ. বিচার বিভাগীয় সিদ্ধান্ত রোধ এবং বিধি-নিষেধ অপসারণের উদ্দেশ্যে কংগ্রেস আইন প্রণয়ন করতে পারে ।

ঙ. বিচার বিভাগকে নিয়ন্ত্রণের জন্য আইন বিভাগ যে কোনো আইন প্রণয়ন করতে পারে। ফলে বিচার বিভাগ তথা সুপ্রিমকোর্ট অসহায় অবস্থার মধ্যে পতিত হয়।

বিচার বিভাগ কর্তৃক আইন বিভাগের উপর নিয়ন্ত্রণ : মার্কিন কংগ্রেসের উপর বিচার বিভাগের নিয়ন্ত্রণ ক্ষমতা রয়েছে।

ক. মার্কিন কংগ্রেস কর্তৃক প্রণীত যে কোনো আইনের বৈধতা বিচার করার ক্ষমতা আদালতের রয়েছে। বিচার্য আইনটি সংবিধান বিরোধী হলে আদালত অসাংবিধানিকতার দায়ে তা বাতিল করে দিতে পারে।

উপরিউক্ত আলোচনার প্রেক্ষিতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সংবিধানে বিরাজমান পরাস্পরিক নিয়ন্ত্রণ ও ভারসাম্যের নীতিকে নিম্নের ছকে উপস্থাপন করা যায় :

সুতারাং বলা যায়, -মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে পারস্পরিক নিয়ন্ত্রণ ও ভারসাম্যের নীতি বিদ্যমান থেকে সংবিধানের ভিত্তি ক্ষমতা স্বতন্ত্রীকরণ নীতিকে যথাযথভাবে নিয়ন্ত্রিত করে সমগ্র শাসনব্যবস্থায় এক গভীর যোগসূত্র স্থাপন করে একে গতিশীলতা দান করেছে। পারস্পরিক নিয়ন্ত্রণ ও ভারসাম্য নীতির স্বপক্ষে বলতে গিয়ে Fanlkner and Kepner বলেন যে, “Thus in theory, Congress could not become too unreasonable in the laws it passed; the President could not become a dictator and the courts could not oppose forever the other two branches of Government”. # ( Fanlkner and Kepner, America: Its History and People, Ch. 5, p-139)

Leave a Reply