চাপসৃষ্টিকারী গোষ্ঠীর কার্যাবলি

চাপসৃষ্টিকারী গোষ্ঠীর ভূমিকা / কার্যাবলি Role or Functions of Pressure Group

রাজনীতির ভাষার চাপসৃষ্টিকারী গোষ্ঠী কোনো রাজনৈতিক সংগঠন না হলেও তাদের ভূমিকা বা কাজের পরিধি অনেক ব্যাপক ও বিস্তৃত। রাষ্ট্রবিজ্ঞানীদের দৃষ্টিতে একটি আধুনিক রাষ্ট্রে চাপসৃষ্টিকারী গোষ্ঠী বা স্বার্থান্বেষী গোষ্ঠী নিম্নোক্ত কার্যাবলি সম্পাদন করে থাকে ।

১. সরকার জনগণের মধ্যে সেতুবন্ধন চাপসৃষ্টিকারী গোষ্ঠী সরকারের সাথে জনগণের সংযোগ সাধনের পথকে সুগম করে দেয়। গোষ্ঠীসমূহ জনগণের অভাব-অভিযোগ এবং দাবি-দাওয়া সরকারের নিকট তুলে ধরে এবং সরকার তাদের মাধ্যমে জনগণের অভাব-অভিযোগ সম্পর্কে অবগত হয়। ফলে সরকার সাধ্যানুযায়ী এ ধরনের অভাব-অভিযোগ সমাধানে সচেষ্ট হয়।

২. তথ্য সরবরাহ : গণমাধ্যমের ন্যায় চাপসৃষ্টিকারী গোষ্ঠীসমূহ গুরুত্বপূর্ণ তথ্য ও সংবাদ প্রদানের উৎস হিসেবে কাজ করে থাকে। সরকারি নীতির উপর প্রভাব বিস্তারের জন্য গোষ্ঠীসমূহ আইনসভার সদস্য, আমলা এবং সাধারণ নাগরিকদেরকে বিভিন্ন বিষয়ে তথ্য সরবরাহ করে থাকে। এরূপ তথ্য সরবরাহের মাধ্যম হিসেবে চাপসৃষ্টিকারী গোষ্ঠীসমূহ বক্তৃতা-বিবৃতি, সভা-সমিতি, পুস্তিকা প্রকাশ, সংবাদপত্রে বিজ্ঞাপন প্রদান কিংবা বিক্ষোভ ও ধর্মঘটের আশ্রয় গ্রহণ করে থাকে।

৩. সরকারি নীতি আইন প্রণয়নকে প্রভাবিত করা : চাপসৃষ্টিকারী গোষ্ঠীসমূহ সরকারি নীতি, আইন ও সিদ্ধান্ত সম্পর্কে সদা দৃষ্টি রাখে। সরকার কোনো নীতি প্রণয়ন কিংবা সিদ্ধান্ত গ্রহণের উদ্যোগে নিলে অথবা আইনসভা কোনো আইন প্রণয়নের উদ্যোগ নিলে চাপসৃষ্টিকারী গোষ্ঠীসমূহ প্রভাব বিস্তার করে উক্ত আইন বা সিদ্ধান্তকে নিজেদের অনুকূলে নিয়ে আসার চেষ্টা করে । স্বার্থগোষ্ঠীসমূহ নিজেদের বক্তব্য বা দাবি-দাওয়া উত্থাপন করে আইন প্রণয়ন বা সংশোধন করতে কর্তৃপক্ষকে বাধ্য করে।

৪. সরকারের ত্রুটি-বিচ্যুতি দূরীকরণ : গণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থার অন্যতম বৈশিষ্ট্য হলো সরকারের গঠনমূলক সমালোচনা । চাপসৃষ্টিকারী গোষ্ঠীসমূহ সরকারের কর্মপন্থা সম্পর্কে সজাগ দৃষ্টি রাখে এবং ত্রুটি বিচ্যুতিসমূহ তুলে ধরে। ফলে জনগণও সরকারের কর্মকাণ্ড সম্পর্কে সহজেই অবগত হতে পারে এবং সরকারও তাদের নিজস্ব দোষ-ত্রুটি পরিহার করার সুযোগ পায়।

৫. বিভিন্ন স্বার্থের সংহতি সাধন : আধুনিক গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে অনেক ধরনের চাপসৃষ্টিকারী গোষ্ঠী বা স্বার্থগোষ্ঠীর উপস্থিতি লক্ষণীয়। এ সকল স্বার্থগোষ্ঠী সমাজের বিভিন্ন স্বার্থের প্রতিনিধিত্ব করে থাকে। এক্ষেত্রে মাঝে মাঝে সমাজে পরস্পর বিরোধী স্বার্থের আবির্ভাব হতে পারে। চাপসৃষ্টিকারী গোষ্ঠীসমূহ বিচক্ষণতার সাথে এসকল পরস্পর বিরোধী স্বার্থসমূহকে একত্রিত করে সংহতি সাধন করে থাকে ।

৬. বিচার বিভাগের উপর প্রভাব বিস্তার : চাপসৃষ্টিকারী গোষ্ঠীসমূহের প্রভাব হতে বিচার বিভাগও সম্পূর্ণভাবে মুক্ত নয়। স্বার্থগোষ্ঠীসমূহ দু’টি ভিন্ন উপায়ে বিচার বিভাগের উপর প্রভাব বিস্তার করার চেষ্টা করে।

প্রথমত : স্বার্থগোষ্ঠীসমূহ তাদের প্রতি স।নুভূতিশীল ব্যক্তিবর্গকে বিচারক পদে নিয়োগদানের জন্য তৎপর থাকে।

দ্বিতীয়ত : আদালতে মামলা দায়ের করে এবং নিজেদের স্বার্থের স্বপক্ষে যুক্তি প্রদর্শন করে চাপসৃষ্টিকারী গোষ্ঠীসমূহ বিচারকদেরকে প্রভাবিত করার চেষ্টা করে।

এছাড়া সংবাদপত্রে ও ইলেকট্রনিক মাধ্যমে বিভিন্ন প্রবন্ধ ও পর্যালোচনামূলক লেখনি বিচারকদের মন-মানসিকতা ও চিন্তাধারা গঠনের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে।

৭. চলমান রাজনৈতিক ব্যবস্থায় ভূমিকা পালন : চাপসৃষ্টিকারী গোষ্ঠীসমূহ অনেকটা রাজনৈতিক দলের মতোই ভূমিকা পালন করে থাকে। বিশেষ করে গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে যেখানে বহুদলীয় রাজনৈতিক ব্যবস্থা বিদ্যমান, সেখানে যেমন একাধিক বিরোধী দল সর্বদা সরকারের বিরুদ্ধে লেগে থাকে তেমনি স্বার্থগোষ্ঠীগুলো বিদ্যমান রাজনৈতিক ব্যবস্থার উপর নিজস্ব দৃষ্টিভঙ্গি ও মনোভাব ব্যক্ত করে। আর এতে করে স্বার্থগোষ্ঠীসমূহ অধিকতর সুবিধাজনক ও নমনীয়তার প্রশ্নে বিদ্যমান ব্যবস্থা সংরক্ষণের উদ্যোগ গ্রহণ করে, নতুবা উক্ত ব্যবস্থা পরিবর্তনের জন্য আন্দোলনের ডাক দেয় ৷

রাজনৈতিক ব্যবস্থার পরিবর্তন : রাজনৈতিক ব্যবস্থার পরিবর্তন সাধনের ক্ষেত্রে চাপসৃষ্টিকারী গোষ্ঠীসমূহ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। কেননা, এ সমস্ত গোষ্ঠী রাজনৈতিক বিচার-বিবেচনা দ্বারা প্রভাবিত হয়। রাজনৈতিক ব্যবস্থা সম্পর্কে তাদের সুস্পষ্ট মনোভাব, অনুভূতি ও সংবেদনশীলতা থাকে। এসবের প্রতি লক্ষ রেখে তারা রাজনৈতিক ব্যবস্থার পরিবর্তনের আন্দোলনে অংশগ্রহণ করে।

৯. : রাজনৈতিক নিয়োগ : চাপসৃষ্টিকারী গোষ্ঠীসমূহ রাজনৈতিক নিয়োগ সংক্রান্ত কাজও করে থাকে। কেননা, চাপসৃষ্টিকারী গোষ্ঠীর অনেক সদস্য বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের পৃষ্ঠপোষকতায় রাজনৈতিক জীবনে প্রতিষ্ঠা লাভ করেন। চাপসৃষ্টিকারী গোষ্ঠীর সাথে সংযোগের ফলে অনেকের মধ্যে রাজনীতির প্রতি আগ্রহ সৃষ্টি হয় এবং তারা রাজনৈতিক পদে নিয়োগ লাভ করেন। আধুনিক রাজনৈতিক ব্যবস্থায় চাপসৃষ্টিকারী গোষ্ঠী থেকে রাজনৈতিক দলগুলো সমর্থক ও কর্মী সংগ্রহ করে থাকে।

১০, নির্বাচনি রাজনীতিতে ভূমিকা : অনেকক্ষেত্রে রাজনৈতিক দলসমূহ চাপসৃষ্টিকারী গোষ্ঠীগুলোকে পৃষ্ঠপোষকতা করে থাকে । রাজনৈতিক দলসমূহ নির্বাচনে জয়ী হবার জন্য বিভিন্ন প্রলোভন দেখিয়ে স্বার্থগোষ্ঠীগুলোকে নিজেদের অনুকূলে নিয়ে আসে। আবার চাপসৃষ্টিকারী গোষ্ঠীসমূহও নিজেদের গোষ্ঠী স্বার্থের কথা চিন্তা করে পছন্দনীয় দলের ব্যানারে আশ্রয় নিয়ে নির্বাচনি প্রচারণায় অবতীর্ণ হয়। তবে চাপসৃষ্টিকারী গোষ্ঠীসমূহ নির্বাচনে এমনভাবে প্রচারণা চালায় যাতে করে সমর্থিত দল বা ব্যক্তি জয়লাভ করলে তারা উপকৃত হয়, আর প্রতিদ্বন্দ্বী দল জয়লাভ করলেও তেমন কোনো ক্ষতির সম্ভাবনা থাকে না ।

 ১১. সরকারের গণতান্ত্রিক চরিত্র সংরক্ষণ : চাপসৃষ্টিকারী গোষ্ঠীসমূহ সরকারের গণতান্ত্রিক কর্মকাণ্ডের উপর সর্বদা সতর্ক দৃষ্টি রাখে। সরকারের নীতি অগণতান্ত্রিক বা স্বৈরাচারী ভূমিকায় অবতীর্ণ হলে স্বার্থগোষ্ঠীগুলো গঠনমূলক ভূমিকা পালনের মাধ্যমে সরকারকে সতর্ক করে দেয়। এই সতর্কতার প্রেক্ষিতে সরকার তার আচরণ সংশোধন করতে পারে, নতুবা স্বার্থগোষ্ঠীগুলো আন্দোলনে অবতীর্ণ হয়ে সরকারকে গণতান্ত্রিক রীতি-নীতি পালনে বাধ্য করে।

১২. সরকারের উপদেষ্টা হিসেবে ভূমিকা : চাপসৃষ্টিকারী গোষ্ঠীসমূহ সরকারের উপদেষ্টার ভূমিকাও গ্রহণ করে থাকে। কেননা, বর্তমানে সরকার বিশেষ স্বার্থ সংশ্লিষ্ট আইন প্রণয়ন এবং ব্যবস্থা গ্রহণের পূর্বে সংশ্লিষ্ট গোষ্ঠীর প্রতিনিধিদের সাথে আলোচনা করে। যার ফলশ্রুতিতে সরকার গোষ্ঠীর অভিজ্ঞতা ও পেশাদারি বক্তব্যের মাধ্যমে আইন অথবা সিদ্ধান্তকে ত্রুটিমুক্ত করার সুযোগ পায় ।

১৩. সরকারের উপর প্রত্যক্ষ চাপ সৃষ্টি : আইনসভার সদস্য কিংবা মন্ত্রীদেরকে দিয়ে সহজে ‘স্বার্থ উদ্ধারে ব্যর্থ হলে প্রয়োজনবোধে চাপসৃষ্টিকারী গোষ্ঠীসমূহ সরকারের উপর প্রত্যক্ষ চাপসৃষ্টির জন্য হরতাল, ধর্মঘট, ঘেরাও প্রভৃতি কৌশল অবলম্বন করে থাকে। বিভিন্ন দেশে বিভিন্ন সময়ে এভাবে পেশাজীবী সংগঠনগুলো এবং ভিন্নধর্মী চাপসৃষ্টিকারী গোষ্ঠী তাদের দাবি-দাওয়া আদায়ের জন্য ধর্মঘট করে থাকে ।

১৪. জনমত গঠনের বাহক : চাপসৃষ্টিকারী গোষ্ঠীসমূহ নিজেদের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট অভাব-অভিযোগ ও দাবি-দাওয়ার সপক্ষে ব্যাপক প্রচারের উদ্দেশ্যে গণসংযোগ করে। জনসাধারণের মধ্যে ব্যাপক প্রচারের মাধ্যমে গোষ্ঠীগুলো নিজেদের স্বার্থের অনুকূলে জনমত সংগঠিত করতে উদ্যোগী হয়। এভাবে সরকারের উপর চাপ সৃষ্টি করে স্বার্থগোষ্ঠীগুলো নিজেদের দাবি-দাওয়া আদায়ের চেষ্টা করে থাকে।

১৫. উদারনৈতিক ব্যবস্থায় ভূমিকা : উদারনৈতিক গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা চাপসৃষ্টিকারী গোষ্ঠীসমূহের সুষ্ঠু কার্যকারিতার জন্য বিশেষভাবে সহায়ক। এ ব্যবস্থাতে তারা নিজেদের বিশেষভাবে সুসংগঠিত করতে পারে। উপরন্তু আধুনিক বহুত্ববাদী সমাজ বিভিন্ন গতিশীল গোষ্ঠীর সমন্বয়ে গঠিত বিধায় চাপসৃষ্টিকারী গোষ্ঠীসমূহের অবস্থান একমাত্র গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় অধিক প্রভাব ফেলে ।

১৬. সামাজিক সাংস্কৃতিক গোষ্ঠী গঠন : সাধারণত চাপসৃষ্টিকারী গোষ্ঠীসমূহ নিজেদের স্বার্থ উদ্ধারের জন্য বিভিন্ন অরাজনৈতিক সামাজিক সাংস্কৃতিক গোষ্ঠী গঠন করে থাকে। অনেক সময় আইনসভার সদস্য ও মন্ত্রিদের এসব সংগঠনের আজীবন সদস্য, অনারারী সদস্য, পৃষ্ঠপোষক, প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে সংশ্লিষ্ট করা হয়। সাধারণ নির্বাচনের সময় চাপসৃষ্টিকারী গোষ্ঠীসমূহ এসকল সদস্যকে নির্বাচিত করার জন্য আপ্রাণ চেষ্টা চালায়। এর বিনিময়ে আইনসভার সদস্যগণ সৌজন্যস্বরূপ চাপসৃষ্টিকারী গোষ্ঠীর স্বার্থের অনুকূলে অনেক কাজ করে থাকে।

১৭. রাজনৈতিক কৃষ্টির উপর প্রভাব : চাপসৃষ্টিকারী গোষ্ঠীসমূহ রাষ্ট্রে বিদ্যমান রাজনৈতিক কৃষ্টির উপর প্রভাব বিস্তার করতে সক্ষম হন। কেননা, রাজনৈতিক কৃষ্টি যদি চাপসৃষ্টিকারী গোষ্ঠীর অনুকূলে হয় তবে তাদের পক্ষে দাবি-দাওয়া আদায় সহজ হয়। ১৮. প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামোর উপর প্রভাব : চাপসৃষ্টিকারী গোষ্ঠীসমূহ প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামোর উপরে প্রভাব বিস্তার করে নিজেদের স্বার্থ আদায়ে সচেষ্ট হয়। ইউরোপ ও আমেরিকার শাসনব্যবস্থায় চাপসৃষ্টিকারী গোষ্ঠীসমূহ আইন ও শাসন বিভাগতে প্রভাবিত করে নিজ নিজ গোষ্ঠীর স্বার্থ সংরক্ষণে সচেষ্ট হয় ।

১৯. আধুনিকীকরণের উপর প্রভাব বিস্তার উন্নয়নশীল দেশগুলোতে সামরিক বাহিনী অত্যন্ত শক্তিশালী চাপসৃষ্টিকারী গোষ্ঠী হিসেবে আবির্ভূত হয়। যে কারণে উন্নয়নশীল দেশগুলোতে সামরিক বাহিনী যথেষ্ট প্রভাব খাটাতে সক্ষম হয়। ফলে তারা সুকৌশলে নিজেদেরকে ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত করে এবং দেশকে আধুনিকীকরণের দিকে ধাবিত করে।

২০. সমাজ গঠনে চাপসৃষ্টিকারী গোষ্ঠীর প্রভাব : যে কোনো দেশের আইন, শাসন ও বিচারব্যবস্থায় চাপসৃষ্টিকারী গোষ্ঠী অব্যাহতভাবে যথেষ্ট প্রভাব বিস্তার করে চলেছে। এ অবস্থায় দেশের অভ্যন্তরে চাপসৃষ্টিকারী গোষ্ঠী তাদের এ প্রভাবকে টিকিয়ে রাখার জন্য তাদের অনুকূলে সমাজ গঠনে চেষ্টা করে।

উপরিউক্ত আলোচনার প্রেক্ষিতে বলা যায় যে, চাপসৃষ্টিকারী গোষ্ঠীসমূহ আধুনিক রাজনৈতিক জীবনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। চাপসৃষ্টিকারী গোষ্ঠীর ক্রিয়াকলাপের মাধ্যমে আধুনিক রাজনৈতিক ব্যবস্থায় সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। যে কারণে চাপসৃষ্টিকারী গোষ্ঠীর ক্রিয়াকলাপ পর্যালোচনা করলেই আধুনিক রাজনীতির বিশ্লেষণ সম্ভব।

Leave a Reply